ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, নওগাঁ : তাসমিনা নওগাঁর ধামইরহাটের সেই অদম্য কিশোরীটি। এবার নিশ্চয় চিনে ফেলেছ তাকে। আমাদের অহংকারের ঘোড়সওয়ার ১৪ বছরের তাসমিনা। ঘোড়া দাবড়িয়ে নওগাঁ ও নওগাঁর পার্শ্ববর্তী জেলার সকল পুরুষ প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে একের পর এক ছিনিয়ে নিয়ে চলেছে বিজয়ের মালা। বর্তমানে দেশ পাড়ি দিয়ে বিদেশের মাটিতে পুরস্কার অর্জন করেছেন। নওগাঁ জেলার ধামেরহাট উপজেলার পূর্ব চকসুবল গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর ওবায়দুল হোসেনের মেয়ে তাসমিনা। পড়েন সংঘেরপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে। বাবার একটি ঘোড়া ছিল বাড়িতে। ৭ বছর বয়স থেকেই ঘোড়াটিকে ঘাস খাওয়ানোসহ লালন-পালনে সহায়তা করতে গিয়ে সখ্যতা তৈরী হয় ঘোড়ার সাথে। তারপর ধীরে ধীরে নেমে যান প্রতিযোগিতার মাঠে। প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয় ঘোড় সওয়ারী তাসমিনার অভিযাত্রা। ওর তো বয়স পুতুল খেলার। বড় জোড় কাঠের ঘোড়ার সাথে হয়ে থাকবে তার সক্ষ্যতা। কিন্তু এ বয়সেই সত্যিকারের ঘোড়ার সাথে হয়ে গেছে ওর দারুণ বোঝাপড়া। প্রতিযোগিতার যে কোন মাঠেই তাই আলোচ্য নাম তাসমিনা। কী যাদু তার হাতে! লাগাম ধরে পায়ের কোন পরশ তার ঘোড়াকে ছুটিয়ে নেয় তীর বেগে? একে একে পিছনে পড়তে থাকে তার সাক্ষাত গুরু সওয়ারী বাবা এবং বাপ-বয়েসী আর আর সব বাঘা বাঘা সওয়ারীরা। প্রতিযোগিতার যে কোন মাঠেই তাই তাসমিনাই আইকন। কোথা থেকে আবির্ভাব হলো আমাদের এই রূপকথার ঘোড়সওয়ারীর! ও যেন আমাদের জোয়ান আব আর্ক, আমাদের সুলতানা রাজিয়া! তাসমিনাকে নিয়ে করা প্রথম আলোর ডকুমেন্টারী ‘ঘোড়সওয়ারী তাসমিনা’ ইতিমধ্যে ঘুরে এসেছে সুদূর প্যারিস থেকে। তাসমিনার এমন কান্ডে গোটা দেশবাসীই আজ গর্বিত। আমাদের গর্বের তো সীমা থাকতে নেই। তাসমিনা যে নওগাঁর! আমাদেরই যেন কেউ এক জন। ওকেও একজন ফড়িং ভাবতেই আমাদের ভালো লাগে। আমাদের শখ সংখ্যার প্রতিপাদ্য হয়ে উঠল তাই তাসমিনার এই বিজয়ের কাহিনি। ঘোড়ায় চরা কি ওর শখ, না পেশা? প্রথমে তো শখের বসেই সে ঘোড়ায় চেপেছে। তারপর এমন কৌশল সে রপ্ত করে ফেলেছে যে তা এখন তার পেশার পর্যায়ের। তাসমিনার মুখে কিছু কথা শুনে নিবার ইচ্ছা ছিল আমাদের।
(ঢাকারনিউজ২৪.কম/এসডিপি/১০:৫৮পিএম/২০/১/২০১৯ইং)
আপনার মতামত লিখুন :