• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রত্যাশা ত্যাগেই প্রশান্তি


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ৬:৫৪ PM / ২১৮
প্রত্যাশা ত্যাগেই প্রশান্তি

মাসউদ আহমেদ : প্রত্যাশায় মধ্যমপন্থা অবলম্বন অপ্রত্যাশিত মেওয়া “প্রশান্তি” মিলে।প্রত্যাশা ত্যাগের মত মহান কাজ আপনাকে আত্মার প্রশান্তির জগতের রাজা বানাবে। অপ্রত্যাশিত প্রত্যাশায় কেবল অকল্পনীয় কষ্ট জুটে।প্রত্যাশার চাপ ও পাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত আকাঙ্খা স্বাভাবিক কার্যফলে আঘাত হানে।পৃথিবী প্রশান্তিময় যদি প্রত্যাশা নামক অশান্তির হেতুকে ত্যাগ কিংবা লাগাম পরানো যায়।চোখ তুলুন, তুলতুলে প্রেমময় সম্পর্ক আজ মিটিমটি করে কেবল নিস্প্রাণ বেচে আছে হেতু কোন না কোন প্রত্যাশার পাহাড়।যদি প্রত্যাশার পাগলা ঘোড়াকে লাগাম পরানো যেত তুলতুলে প্রেম ফুলে ফলে বিশাল বাগান হতো।অতিথিরা আনন্দে ভরে দিত সে বাগান।আচমকা কোন চাওয়া নাছোড়বান্দা হয়ে সে বাগানে হুতুম পেচারা ডাকছে।ভয় উত্তাল তরঙ্গ তুলে মন পাথারে।নিস্তব্ধতা নিসঙ্গতা সঙ্গী হলো হাজারো জনকোলাহলের ভীড়েও।সুপার ন্যাচারাল হৃদ্যতা সুপ্রিম নিস্তব্ধতায় কেবল প্রত্যাশার যাচ্ছেতাই ব্যাবহারে।ভেবে দেখুন যেখানেই টুনটান ঠুনঠান কিছু না কিছু হয়েছে পেছনে কড়া নেড়েছিলেন চাওয়ার পাওয়ার অসামাঞ্জস্যতা।জীবনে মিলিয়ে দেখুন?

সরকার থেকে জনগণ,দেশ থেকে দেশ, নেতা থেকে কর্মী, উচ্চপদস্থ থেকে নিম্মপদস্থ,পিতা-মাতা থেকে সন্তান, স্বামী থেকে স্ত্রী, শ্বশুর বাড়ি থেকে জামাই,ভাই থেকে বোন, ভাই থেকে ভাই,পরিবার থেকে আপনি, আত্নীয় থেকে আত্নীয়, প্রতিবেশি থেকে প্রতিবেশী কিংবা উল্টো দিকে যখনই প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির চরম সীমালঙ্ঘন হয় সম্পর্ক, শান্তি তখন চিতার দহনে পুড়ে পুড়ে ছাই।সরকারের কাছে জনগন রাতারাতি আর সীমা না মাড়ালে প্রশান্তির রাজ প্রাসাদ হত।এ পবিত্র জান্নাতী সম্পর্ক গুলো নরক যন্ত্রণা দেয় যা শুরু হয় চাওয়া পাওয়ার দ্বন্দ্ব থেকে। জগতে যত আয়োজন কেবল শান্তির তালাশে।পাওয়ার প্রত্যাশায় দেওয়া সম্পর্কের কাচি স্বরূপ।যার জন্য জীবন বাজি রাখতেও দ্বিধা হতো না প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির অসামন্তরালের ফলে আজ মুখ ফিরিয়ে চলছে।প্রত্যাশার অতিরঞ্জন কখনো অহংকার প্রসূতও হয়।যার কাছে প্রত্যাশার পাহাড় তুলেছেন তার সক্ষমতা অক্ষমতা কে আমলে নিন। সুই চলে না কুড়াল চালাতে বললে অশান্তিরা দরজা জানালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকবে।

আপনার নেতা,পিতা মাতা,স্বামী,স্ত্রী, ভাই,বোন আত্নীয় স্বজন ইত্যাদি কেউ আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছেন?বা আপনি তাদের প্রত্যাশা কি পরিমাণ পূরন করতে পেরেছেন? নেতা দল ছেড়েছে, কর্মী নেতা ছেড়েছে,সন্তান মাতা পিতা ঘর ত্যাগ করেছে, স্বামী স্ত্রী বিচ্ছেদ হয়েছে, আত্নীয় আত্নীয়র খোজ আগের মত নিচ্ছে না এর কারণের বিশাল অংশ জুড়ে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির বিকলাঙ্গতা খুজুন, পাবেন।আনুকূল্য, ত্যাগীসাজ,পদ,ছাড়,সাতখুন মাপ ইত্যাদি পাবার প্রত্যাশায় কত অন্যায় জেনে, করে,আবার বুক চিতিয়ে প্রকাশও করেছেন সেখানে ঘুরে বালি থেকে হতাশা দিনশেষে দূরত্ব।

দানের বিনিময় স্বয়ং বিধাতা ব্যতীত কারো দ্বারে প্রত্যাশা অনুচিত।দ্রুত ফল চাওয়া কাজকে নিরানন্দ ও হতাশায় পর্যবসিত করে।নিস্বার্থ দান নি:শর্ত তৃপ্তিদায়ক। মহান সৃষ্টিকর্তা সবকিছু নিস্বার্থে দিয়েছেন।ভাবছেন তিনি আপনার আমার কাছে বিনিময় চাচ্ছেন মোটেও না ইবাদতেরও আলাদা পুরুস্কার রেখেছেন।নিয়ামতের বিনিময়ে ইবাদত বা শোকরই যদি হত জান্নাত প্রত্যাশা করা অতিরঞ্জন বৈ কি হত?

ক্ষনিকের সফরে এসে কল্পনাসম অট্টালিকা তৈরির ভাবনা এ জীবনই নয় পরজীবনকেও শেষ করে দেয়।তাই ভুল পথে সুখ খুজতে গিয়ে যেন অসুখের দরজায় কড়া না নাড়ি। তাই ভুল পথে সুখ খুজতে খুজতে যেন অসুখের দরজায় কড়া না নাড়ি।আমরা আমাদের আমি কে যেন চিনতে পারি।প্রত্যাশা ত্যাগ দিলে সর্বোত্তম প্রশান্তি মিলে আর মাধ্যম পন্থা মধ্য মানের সুখ আর অতিরঞ্জন অশান্তি আনে।

লেখক- মাসউদ আহমেদ
শিক্ষক ও কলামিস্ট